ওমরাহ গাইডলাইন । কিভাবে ওমরাহ করবেন?
ওমরাহ একটি আধ্যাত্মিক যাত্রা। এটি একটি সুযোগ যা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের একত্রিত করে একটি সুমহান ঐতিহ্য উদযাপনের উপলক্ষ তৈরি করে দেয়। ওমরাহ আল্লাহর নৈকট্য অর্জন এবং গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের মাধ্যমে আত্নশুদ্ধির সুযোগ তৈরি করে। আমরা এখানে ওমরাহ পালনের নির্দেশিকা বিস্তারিত আলোচনা করব ।


ওমরাহ পালনের ধারাবাহিক কার্যপ্রণালী:
০১. ইহরাম (ফরজ)
ওমরাহ পালন করার জন্য ইহরাম অপরিহার্য। ইহরাম অবস্থায় প্রবেশের জন্য এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন:
- পরিষ্কার-পচ্ছিন্ন হয়ে গোসল বা অজু করে নিন।
- সেলাইবিহীন একটি সাদা কাপড় পরিধান করুন মিকাত অতিক্রমের আগেই।
- ইহরামের নিয়তে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিন।
- ওমরাহর নিয়ত করার পর এক বা তিনবার নিন্মোক্ত তাকবির পড়ে নিন। তালবিয়া হলো-
লাব্বাইকা আলাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাকা।
অর্থ: আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি হাজির, তোমার কোন অংশীদার নেই, আমি হাজির, নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা এবং নেয়ামত তোমার এবং একচ্ছত্র আধিপত্য তোমার, তোমার কোন অংশীদার নেই।
০২. তাওয়াফ (ফরজ)
তাওয়াফের সময়, এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন:
- তাওয়াফের নিয়ত করুন।
- অজু করে নিন।
- ইহরামের চাদর সঠিকভাবে ডান কাঁধে পেঁচিয়ে নিয়ে বাম কাঁধের ওপর রাখুন।
- হাজরে আসওয়াদকে সামনে রেখে তার ডান পাশ বরাবর দাঁড়ান।
ভিড় না থাকলে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করে তাওয়াফ শুরু করুন। আলতোভাবে উভয় হাত পাথরের উপর রাখুন, “বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার” বলুন এবং চুম্বন করুন। বিকল্পভাবে, ডান হাত দিয়ে হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করুন এবং সরাসরি চুম্বন করা কঠিন হলে হাতের স্পর্শ করা অংশে চুম্বন করুন।
হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করা বা চুম্বন করা সম্ভব না হলে দূরত্বে দাঁড়িয়ে ডান হাত তুলে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলুন এবং এক হাত দিয়ে হাজরে আসওয়াদের দিকে ইশারা করুন। এই ক্ষেত্রে চুম্বন বা হাত স্পর্শ করা আবশ্যক নয়। এভাবে তাওয়াফ শেষ করুন সাত চক্করে।


০৩. সায়ি (ওয়াজিব)
এখানে সায়ি’র পদ্ধতি দেওয়া হল:
- সাফা পাহাড়ের কাছে গিয়ে কাবা শরিফের দিকে মুখ করে দাঁড়ান।
- দোয়ার মতো হাত তুলে তিনবার তাকবির বলুন।
- সাফা পাহাড় থেকে মারওয়া পাহাড়ের দিকে রওনা হন।
- মারওয়া পাহাড়ের কাছে পৌঁছালে, সাফা পাহাড়ের দিকে মুখ করে দোয়ার মতো হাত তুলে তাকবির বলুন।
- মারওয়া পাহাড়ের উপরে উঠুন।
- মারওয়া পাহাড় থেকে সাফা পাহাড়ের দিকে রওনা হন।
- উভয় পাহাড়ের দিকে মুখ করে দোয়ার মতো হাত তুলে তাকবির বলুন।
- সাফা পাহাড় থেকে মারওয়া পাহাড়ের দিকে রওনা হন।
- এইভাবে সাত চক্কর লাগান।
- সায়ি শেষে দোয়া করুন।
সায়ি করার সময় আপনি হাঁটতে পারেন, দৌড়াতে পারেন, বা হেঁটে যেতে পারেন।
০৪. হলক করা (ওয়াজিব)
হলক করা (ওয়াজিব)। এটি ওমরাহ পালনে অবশ্যই করনীয়। পুরুষের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ অনুসরণে সম্পূর্ণ মাথা মুণ্ডন করবেন । তবে মাথার চুল ছাঁটতেও পারেন। মহিলাদের ক্ষেত্রে চুল এক ইঞ্চি পরিমাণ কাটবেন।

ওমরাহ পালনে করনীয় বর্জনীয়:
কি করা যাবে:
- নিয়ত করা
- ইহরাম বাঁধা
- সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সায়ি করা
- সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সায়ি করা
- হাজরে আসওয়াদে চুমু খাওয়া বা ইশারা করা
- হলক করা
কি করা যাবেনা:
- ইহরাম অবস্থায় যৌন মিলন করা
- শেভ করা
- নখ কাটা
- লোম তোলা
- সুগন্ধি ব্যবহার করা
- শিকার করা
- ঝগড়া করা
- গালাগালি করা
- খারাপ কথা বলা